জিলহজ্ব মাসের বিশেষ আমলঃ EID UL ADHA Special acts for all Muslim

জিলহজ্ব মাসের বিশেষ আমলঃ


১. প্রথম ১০ দিনে নফল রোযা ও রাতে ইবাদত করা।
২. চুল-নখ না কাটা।
৩. আরাফার দিন রোজা রাখা।
৪. তাকবীরে তাশরীক বলা।
৫.স্বচ্ছল ব্যক্তির জন্য কুরবানী করা৷

বিস্তারিত হাদীস সমুহঃ

১. প্রথম ১০ দিনে নফল রোযা ও রাতে ইবাদত করাঃ
জিলহজ্ব মাসের চাঁদ উদিত হওয়ার পর থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত দিনে সম্ভব হলে নফল রোযা রাখা (কুরবানীর দিনে রোযা নয়) আর রাতের বেলা বেশী বেশী ইবাদত করা; যথা: নফল নামায, কুরআন তিলাওয়াত, তাসবীহ-তাহলীল, তওবা-ইস্তিগফার ও রোনাজারী ইত্যাদি ইবাদতের মাধ্যমে রাত কাটানো।
ফযীলতঃ
হযরত আবু হুরায়রা (রঃ) থেকে বর্ণিত রসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, জিলহজ্বের ১০ দিনের ইবাদত আল্লাহর নিকট অন্যদিনের ইবাদতের তুলনায় বেশী প্রিয়, প্রত্যেক দিনের রোযা এক বছরের রোযার ন্যায় আর প্রত্যেক রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের ন্যায় । {তিরমিজী শরীফ, সিয়াম অধ্যায়, দশ দিনের আমল পরিচ্ছেদ, ১ম খন্ড, ১৫৮ পৃষ্ঠা}
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রঃ) থেকে বর্ণিত রসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, এই ১০ দিনের আমল অপেক্ষা অন্যদিনের আমল প্রিয় নয়। {বুখারী শরীফ, দুই ঈদ অধ্যায়, আইয়ামে তাশরীক পরিচ্ছেদ, ১ম খন্ড, ১৩২ পৃষ্ঠা}

২. চুল-নখ না কাটাঃ
যারা কুরবানী করবে তাদের জন্য জিলহজ্বের চাঁদ উঠা থেকে কুরবানী করা পর্যন্ত চুল ও নখ না কাটা মুস্তাহাব।
হযরত উম্মে সালামা (রঃ) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যারা কুরবানী করবে, তারা যেন এই ১০ দিন চুল ও নখ না কাটে। {সুনানে ইবনে মাজাহ, কুরবানী অধ্যায়, যে কুরবানী করবে তার জন্য চুল-নখ না কাটার বর্ণনার অধ্যায়, পৃষ্ঠা-২২৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫২৩৩}

৩. আরাফার দিন রোজা রাখাঃ
প্রথম ৯ দিন বিশেষ করে আরাফার দিন অর্থাৎ ৯ জিলহজ্বে নফল রোযা রাখা।(তবে আরাফায় উপস্থিত হাজীদের জন্য নয়)
ফযীলতঃ
হযরত আবু কাতাদা (রঃ) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, আরাফার দিনের রোযার ব্যাপারে আমি আশাবাদী যে, আল্লাহতাআলা তার [রোযাদারের] বিগত ১ বৎসরের ও সামনের ১ বছরের গুনাহ মাফ করে দিবেন।
{তিরমিজী শরীফ, সাওম অধ্যায়, আরাফার দিনে রোযার ফযীলত পরিচ্ছেদ, ১ম খন্ড, ১৫৭ পৃষ্ঠা, সুনানে ইবনে মাজাহ, ১২৪ পৃষ্ঠা}

৪. তাকবীরে তাশরীক বলাঃ
জিলহজ্ব মাসের ৯ তারিখের ফজর থেকে ১৩ তারিখের আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর একবার তাকবীর বলা ওয়াজিব। পুরুষের জন্য আওয়াজ করে, আর মহিলাদের জন্য নীরবে। তাকবীর হলঃ
"আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাল্লহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ”
{ফাতওয়া শামী-তৃতীয় খন্ড, ৬১ পৃষ্ঠা, সালাত অধ্যায়, ঈদ পরিচ্ছেদ, ইলাউস সুনান, সালাত অধ্যায়, তাকবীরাতুত তাশরীক পরিচ্ছেদ, ৮ম খন্ড, ১৪৮ পৃষ্ঠা}

৫. স্বচ্ছল ব্যক্তির জন্য কুরবানী করাঃ
১০, ১১ অথবা ১২ ই জিলহজ্বের যে কোন একদিন, কোন ব্যক্তির মালিকানায় যদি নিত্য প্রয়োজনের অতিরিক্ত সাড়ে ৭ ভরি স্বর্ণ, অথবা সাড়ে ৫২ তোলা রূপা বা এর সমমূল্যের সম্পদ থাকে, তাহলে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। পুরুষ-মহিলা সকলের উপরই এ বিধান প্রযোজ্য। {ফাতওয়া শামী-৯/৪৫৩, ৪৫৭ ফাতওয়া আলমগীরী-৫/২৯২, সুনানে ইবনে মাজাহ-২২৬}
ফযীলতঃ
যায়িদ ইবনে আরকাম (রঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সঃ) এর সাহাবা(রঃ)গণ জিজ্ঞাসা করলেন , হে আল্লাহর রসূল! এ সকল কুরবানীর ফযীলত কি? উত্তরে তিনি (সঃ) বললেন - কুরবানী তোমাদের জাতির পিতা ইবরাহীম (আঃ) এর সুন্নত। তারা (রঃ) পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রসূল! তাতে আমাদের জন্য কি সওয়াব রয়েছে? উত্তরে তিনি (সঃ) বললেন - কুরবানীর পশুর প্রতিটি চুলের বিনিময়ে ১টি সওয়াব রয়েছে। তারা (রঃ) আবারো প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রসূল! ভেড়ার লোমের কি হুকুম? (এটাতো গণনা করা সম্ভব নয়)। তিনি (সঃ) বললেন - ভেড়ার লোমের প্রতিটি চুলের বিনিময়ে ১টি সওয়াব রয়েছে। {সুনানে ইবনে মাজাহ-২২৬}
কঠোর হুশিয়ারীঃ
আবু হুরায়রা (রঃ) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (সঃ)বলেছেন, যে ব্যক্তি সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কুরবানী করলো না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের নিকটেও না আসে। {সুনানে ইবনে মাজাহ-২২৬}
আল্লাহ সুব্বহানাহু ওয়াতা'আলা আমাদের সবাইকে আমলগুলো করার তৌফিক দান করুন, আমিন।

 

 

 


 

 

share your opinion

Dhaka Dairy-regularly update all information about all contact information across Bangladesh.Our primary focus on Dhaka related information. এই পেজ টি আপনার বন্ধু ও পরিবারের সাথে শেয়ার করুন

Post a Comment

0 Comments